অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম খুঁজছেন? আপনি যদি দেশের বাইরে কোথাও ঘুরতে যেতে চান কিংবা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করতে চান তাহলে অনান্য কাগজপত্রের সাথে সাথে আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদের প্রয়োজন হবে।

অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বাংলাদেশ পুলিশের জনগনের জন্য একটি ডিজিটাল সেবা। তাই ঘরে বসেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। বৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন বাধ্যতামূলক।

আজকের এই লেখনীতে কিভাবে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আবেদন করবেন সেটার বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। চলুন পাঠক আর কথা না বাড়িয়ে মূল প্রসঙ্গে চলে যাই।

অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম; সহজ ১১ টি ধাপ

কম্পিউটার দোকানে বার বার যাওয়া আসার ধকল না নিয়ে এখন নিজে নিজেই ঘরে বসে অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের রেজিষ্ট্রেশন করতে নিম্নোক্ত ধাপগুলো ফলো করতে পারেন। 

ধাপ – ০১: বাংলাদেশ পুলিশের সাইটে প্রবেশ করেই প্রথমেই যে বিষয়টির উপর আপনার নজরে আসবে সেগুলো হচ্ছে “প্রয়োজনীয় শর্তাবলী” এবং “প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস”। এই দুটি টপিক খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে নিন। সকল তথ্য জেনে নেওয়ার পরে সাইটে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য তৈরি হয়ে যান।

অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের ওয়েবসাইট-রেজিস্ট্রেশনের জন্য যে সাইটটি বাংলাদেশ পুলিশ দিয়ে রেখেছে সেটা হচ্ছে: https://pcc.police.gov.bd

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে অনান্য সকল সরকারি সেবার মতো এই সাইটেও সেবা নিতে হলে প্রথমে আপনাকে ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন প্রসেসটি খুবই সহজ। মূল ওয়েবসাইট পেজ থেকে Registration বাটন বা অপশনে ক্লিক করুন।

Police clearance login
Police clearance login

ধাপ – ০২: নরমাল সোশ্যাল সাইটে একাউন্ট খোলার মতোই এখানে আপনার নাম, ইমেইল নাম্বার, NID নাম্বার দিয়ে এই সাইটের জন্য একটি পাসওর্য়াড দিয়ে নিন। শেষাংষে ক্যাপচা ঘরে একটি সহজ অংক দেওয়া থাকে, যেমন এখানে ৯+৭ দেওয়া রয়েছে, আপনার বেলায় অন্য সংখ্যা দেওয়া থাকবে, যোগ করে সঠিক নাম্বারটি বসিয়ে Continue বাটনে ক্লিক করুন। আপনি যদি ফরেনার কিংবা ১৮ বছরের নিচে কারো জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে চান তাহলে NID ঘরে সাথে যে Foreign/ Child ঘরটি রয়েছে সেখানে টিক মার্ক দিয়ে নিন, তাহলে আর NID ঘরে কিছু লেখার দরকার হবেনা।

Police clearance account registration
Police clearance account registration

ধাপ – ০৩:  Continue অপশনে ক্লিক করার ৫ মিনিটের মধ্যে যে নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন; সে নাম্বার দিয়ে “স্ক্রিণে দেখানো সঠিক নিয়মে” 6969 নাম্বারে মেসেজ পাঠিয়ে একাউন্টটি ভেরিফাইড করে নিন।

ফোন নম্বর ভেরিফিকেশন
ফোন নম্বর ভেরিফিকেশন

বিঃদ্রঃ ছবিতে দেখানো কোডটি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, আপনার ক্ষেত্রে আপনাকে নিজস্ব কোড দেওয়া হবে।

রেজিস্ট্রেশনের সময় যদি মেইল এড্রেস দিয়ে থাকেন তাহলে সে ইমেইল এড্রেসের মাধ্যমেই সহজে একাউন্ট ভেরিফাই করা যাবে।

একাউন্ট ভেরিফাইড করা হয়ে গেলে মূল সাইট থেকে লগ-ইন বাটনে ক্লিক করুন। যে নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন সে নাম্বারটি দিয়ে আর সঠিক পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লগিন
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লগিন

ধাপ – ০৪: এখন আপনাকে অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করতে মুল ওয়েবসাইটের  নিচের অংশে থাকা Apply Now বাটনে ক্লিক করতে হবে। 

PCC purpose
PCC purpose

ধাপ – ০৫: উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন যে, PCC এর জন্য আপনাকে সর্বমোট ৬টি ধাপ কমপ্লিট করতে হবে। তাই রিলাক্স হয়ে বসুন,  ধীরে সুস্থে কোনো প্রকার তাড়াহুড়া না করে ধাপগুলো পূরণ করা শুরু করুন। 

প্রথমে যে উদ্দেশ্যের জন্য PCC চান সেটা সিলেক্ট করুন। এখানে Go abroad এবং Others অপশন দুটো দেওয়া রয়েছে। আপনি যদি বিদেশ যাওয়ার জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তুলতে চান তারা Go abroad অপশনে ক্লিক করুন। আমরা এখানে Go abroad অপশনের মাধ্যমে দেখিয়ে দিচ্ছি।

Select country of travel
Select country of travel

Go Abroad অপশনে টিক দিলে এর নিচে একটি সাব-অপশন “Country of Travel” চলে আসবে, এই ঘরে আপনি যে দেশে ভ্রমন করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিতে চান সেই দেশটিকে স্ক্রল ডাউন করে সিলেক্ট করেন নিন।

ধাপ – ০৬: দেশ সিলেক্ট করার পর “পারসোনাল ইনফরমেশন” ট্যাবটি সম্প্রসারিত হবে, এবার আপনার পাসপোর্টে যেসব তথ্য দেওয়া রয়েছে সেটাই আপনাকে এখানের প্রতিটি ঘরে হুবহু দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, পাসপোর্টে যদি আপনাদের ব্যাক্তিগত বিষয়ে কোনো ভুল তথ্য দেওয়া থাকে তাহলে এখানেও আপনার পাসপোর্ট মোতাবেক ওই ভুল তথ্যটিই দিতে হবে।

সবশেষে ছবি আপলোডের অপশন রয়েছে, সেখানে আপনার রিসেন্ট একটি পাসর্পোট সাইজ ছবি আপলোড করুন। লক্ষ্য রাখবেন ছবিটির সাইজ যেন 150KB এর বেশি না যায়। সব তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে Save & Next বাটনে ক্লিক করুন।

Personal information
Personal information

ধাপ – ০৭: এই পরবর্তীতে ধাপে আপনাকে ঠিকানার ঘর গুলো পূরণ করতে হবে। এখানে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে তিনটি ঠিকানার অপশন আছে। Emergency Contact Address, Permanent Contact Address এবং Present Address. এদের মধ্যে ইমারজেন্সি আর স্থায়ী ঠিকানাটা আপনার পাসর্পোটে যা দেওয়া রয়েছে সেইরকম দিতে হবে।

সব ঠিকানাগুলো সঠিক ভাবে দিয়ে নিচের দিকে স্ক্রল করে আসুন, সবার শেষে দেখবেন ডেলিভারি টাইপ অপশন রয়েছে। এখানে শুধুমাত্র By Hand অপশনটিই থাকবে অর্থাৎ আপনাকে নিজে হাতে অফিসে গিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। 

Delivery From ঘরে কোন ধরনের অফিস থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের সার্টিফিকেট তুলতে চান সেটা সিলেক্ট করুন। সিলেক্টের পর Save & Continue অপশনে ক্লিক করুন।

Contact address
Contact address

ধাপ – ০৮: এবার আপনাকে বেশকিছু ডকুমেন্টস ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। সেজন্য ডকুমেন্টগুলোকে ভালো করে স্ক্যান এবং সেটিংস করে নিয়ে কম্পিউটারে সেভ করে রাখুন তারপর এখানে আপলোড করে দিন। National ID অথবা Birth Certificate এদের মধ্যে যেকোনো একটি ডকুমেন্ট আপলোড করবেন।

submit documents
submit documents

Add বাটনে ক্লিক করলে ছোট একটি পপআপ উইন্ডো দেখতে পারবেন, সেখান থেকে Choose File অপশনে ক্লিক করে আপনার কম্পিউটার থেকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টটির স্ক্যান কপিটি সিলেক্ট করে নিন। সবশেষে আপলোড বাটনে ক্লিক করুন।

সঠিক ভাবে আপলোড করতে পারলে Status ঘরে সবুজ টিক চিহ্ন চলে আসবে। সকল দরকারি ডকুমেন্ট আপলোড করার পর Save & Continue বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ – ০৯: এতক্ষণ ধরে যে সকল তথ্য ইনপুট বা আপলোড করেছেন সেগুলোর সবকিছু একটি অ্যাপ্লিকেশন আকারে আপনার সামনে চলে আসবে। এখান থেকে প্রতিটি তথ্যকে আবারো ভালো করে রিভাইস দিন, খেয়াল করে দেখুন কোনো তথ্যে ভুল রয়েছে কিনা। স্ক্রল ডাউন করে নিচের দিকে আসুন।

এখানে দেখবেন লাল রংয়ে বলা রয়েছে, এই প্রিভিউ দেখে Final Submit ঘরে টিক দিয়ে পাঠিয়ে দিলে এটা কখনোই ভবিষ্যৎতে সংশোধন বা এডিট করা যাবে না। তাই আবারো ভালো করে অ্যাপ্লিকেশনটি দেখে চেক দিয়ে নিন। এবার সর্বশেষে নিচের Final Submit ঘরে টিক দিন এবং Confirm বাটনে ক্লিক করুন।

Final submit
Final submit

ধাপ – ১০: ফি প্রদান (Bkash/Bank)

আপনার আবেদনটি সাবমিট হয়ে গিয়েছে। এবার আপনাকে ফি দেওয়ার ব্যাপারে সেই সাইটের স্ক্রিনে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হবে। সেগুলো হলো, 

১. আপনাকে অনলাইনে পেমেন্ট করতে বলা হবে অথবা চালান প্রিন্ট আউট করে নিয়ে পরবর্তীতে সেটাকে নিয়ে সোনালী ব্যাংকে ফি জমা দিতে পারবেন।

২) ব্যাংকের মাধ্যমে ফি জমা দেওয়ার পর চালান বা ব্যাংক রশিদকে এই অপশনের মাধ্যমে আপলোড করতে পারবেন।

চালান পরিশোধ
চালান পরিশোধ

এখানে আমরা অনলাইনে ফি প্রদান করবো বিকাশের মাধ্যমে, তাই প্রথম ঘরের Please Click here হাইপার লিংকে ক্লিক করতে হবে।

লিংকে ক্লিক করলে “ই-চালান” ওয়েবসাইটে নিয়ে যাওয়া হবে। এখানে আপনার নামে অটোমেটিক্যালি একটি চালান পত্র তৈরি করা থাকবে। পত্রটি ভালো করে চেক দিয়ে নিন। তারপর নিচের দিকে স্ক্রিল করে আসুন।

নিচের দিকে দেখবেন যে বেগুনী রংয়ের “পরিশোধ” বাটন রয়েছে। সেটায় ক্লিক করলে আলাদা একটি পপআপ উইন্ডো আসবে।

তারপর আপনাকে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়েতে নিয়ে আসা হবে। এখান থেকে আপনি চাইলে সোনালী ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ফি দিতে পারবেন। কার্ডের মাধ্যমেও ফি দিতে পারবেন এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও ফি দিতে পারবেন। তবে দেখানোর স্বার্থে আমরা এখানে মোবাইল ব্যাংকিং অপশনে ক্লিক করবো।

মোবাইল ব্যাংকিং অপশনে ক্লিক করার পর দেখবেন বিকাশ এবং রকেট অপশন চলে এসেছে। আপনি যেকোনো একটি মাধ্যমে ফি দিতে পারবেন। এই পোষ্টে বিকাশের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে, তাই বিকাশ লেখার উপর ক্লিক করা হল। 

উল্লেখ্য যে, রকেটের মাধ্যমে ফি দেওয়ার পদ্ধতিও একই রকম

এখানে আপনাকে ফি এর পরিমাণ জানিয়ে দেওয়া হবে। ফি এর পরিমাণের উপর লক্ষ্য রাখবেন, যেমন এখানে ৫০০.৫৮ দেওয়া রয়েছে মানে ৫০০ টাকা ৫৮ পয়সা ফি দিতে হবে।

দাখিল করুন
দাখিল করুন

এজন্য আপনার বিকাশে নূন্যতম ৫০১ টাকা থাকতেই হবে। মনে রাখবেন এজন্য আপনার অবশ্যই ব্যক্তিগত বিকাশ একাউন্ট থাকা লাগবে, এরপর Pay with bKash অপশনে ক্লিক করুন।

বিকাশ পেমেন্ট সিস্টেমটি সামনে আসলে মাঝখানের সাদা ঘরে আপনার ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারটি লিখুন; এরপর CONFIRM ঘরে ক্লিক করুন।

আপনার দেওয়া নাম্বারে বিকাশ থেকে একটি Verification Code যাবে, সেই কোডটি এখানে দিবেন। তারপর সাথে সাথে CONFIRM বাটনে ক্লিক করুন।

এবার আপনার বিকাশের পিন কোডটি এখানে বসিয়ে দিন, তারপর CONFIRM বাটনে আবার ক্লিক করুন।

ধাপ – ১১: চালান আপলোড

বিকাশ বা রকেটে সঠিকভাবে ফি দেওয়া হয়ে গেলে আপনাকে ই-চালান ওয়েবাসাইটে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে। এখানে দেখবেন যে আপনার পেমেন্ট সফল হয়েছে এই জাতীয় একটি মেসেজ /বার্তা আসবে। সেখানে পাবেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চালান, আপনি এটাকে প্রিন্ট বা ডাউনলোড করার অপশন পাবেন। তারপর ডাউনলোড করে নিবেন এই চালান কে।

চালার ফরম
চালার ফরম

ডাউনলোড করা চালানটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সাইটের ২ নং ঘরে থাকা লিংকে ক্লিক করে আপলোড করতে হবে, ২ নং প্যারার Scan and Click here অংশের হাইপার লিংকে ক্লিক করুন।

এখানে এসে চালান আপলোডের ঘরে ডাউনলোডকৃত চালানকে PDF আকারে আপলোড করতে হবে। কিন্তু লক্ষ্য রাখবেন বাম দিকের Chalan Info ঘরে, এখানে ব্যাংক নেম ঘরে আপনাকে SONALI BANK সিলেক্ট করতেই হবে। বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করলেও আপনি কিন্তু মূলত সোনালী ব্যাংকে অনলাইন মাধ্যমে পেমেন্ট করেছেন। এরপর District, Branch ঘরে আপনার চালানে উল্লেখিত জেলা এবং ব্রাঞ্চ দিয়ে দিবেন।

চালান চেক এবং সাবমিট
চালান চেক এবং সাবমিট

এই চালানে সোনালী ব্যাংকের ঢাকা জেলার লোকাল অফিস দেওয়া রয়েছে তাই সাইটে ঢাকা ডিসট্রিক এবং লোকাল অফিস ব্রাঞ্চ দেওয়া হলো। এবার চালানটি আপলোড করুন। লক্ষ্য রাখবেন চালানের PDF ফাইলটির সাইজ ৩০০ কিলোবাইটের মধ্যে যেন থাকে।

সফলভাবে আপলোড করা হয়ে গেলে উপরের বাম দিকে দেখবেন সবুজ রংয়ের Action Processed বার্তা দেখাবে। এরসাথে আপনার রেফারেন্স, পাসর্পোট নাম্বার, নাম, মোবাইল নাম্বার দেখাবে। অর্থাৎ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর ফি এবং ফি এর রশিদ আপনি সফলভাবে সাইটে আপলোড করতে পেরেছেন! সবশেষে Finish বাটনে ক্লিক করুন।

কিভাবে বুঝবেন ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন হয়েছে কিনা! 

অ্যাপলিকেশন ফিনিশ হওয়ার পর আপনাকে Police Clearance Bangladesh সাইটের হোম পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে Application Status সেকশনে দেখবেন Applicaiton Submitted লেখা আছে। 

এর কিছুদিন পর থানা থেকে আপনার অ্যাপ্লিকেশনটি প্রসেস করে Police Clearance সার্টিফিকেটটি তৈরি করা হবে। 

ভাবছেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে কোথায় যোগাযোগ করতে হয়?

ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেলিভারী দেওয়ার জন্য রেডি হয়ে গেলে Current Status ঘরে Ready for Delivery লেখা দেখতে পাবেন।  আপনাকে নিজে থানায় গিয়ে সার্টিফিকেটটি সংগ্রহ করে আনতে হবে। 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার শর্তাবলী

  • কমপক্ষে ৩ মাস পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে।
  • স্থায়ী অথবা বর্তমান ঠিকানা জেলা পুলিশ বা মেট্রোপলিটনের আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত হতে হবে। পাশাপাশি অবশ্যই উক্ত ঠিকানার বাসিন্দা হতে হবে। 
  • এম আর পির ক্ষেত্রে যদি পাসপোর্টে ঠিকানা উল্লেখ না থাকে তাহলে ঠিকানার প্রমান হিসেবে এনআইডি/জন্মনিবন্ধন এর সাথে স্থানীয় কাউন্সিলরের সনদপত্রের ফটোকপি প্রথম শ্রেণীর সরকারি আমলা দ্বারা সত্যায়িত করে দাখিল করতে হবে। 
  • দেশের অভ্যন্তরের চাকরী বা অন্য কাজে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দরকার হলে সংশ্লিষ্ট জেলা অথবা সিটি এসব শাখায় যোগাযোগ করবেন। 

বর্তমান ঠিকানায় আবেদন করার নিয়ম

পাসপোর্টের ইমার্জেন্সি কন্টাক্টের এড্রেসটি আপনি বর্তমান ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন তবে এখানে পূর্বশর্ত হচ্ছে যে আপনার ইমার্জেন্সি কন্টাক্টের এড্রেসটি অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মেট্রো/জেলার অধীনে হতে হবে। 

অন্যথায় সংশ্লিষ্ট মহানগর বা জেলার পুলিশ অফিস আপনার বর্তমান ঠিকানায় আবেদন গ্রহণ করবেন না। যেমন উদাহরণস্বরূপ – আপনার পাসপোর্টের এড্রেসেটি যদি গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার কোন একটি থানা হয় তাহলেই কেবল আপনি অন্য থানার অধীনে আবেদন করতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে আপনি বর্তমানে যে ওয়ার্ডে বসবাস করছেন সেই ওয়ার্ডের একটি কাউন্সিলর সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে। 

আবেদনের কাজ করার সময় পাসপোর্ট কপি যেখানে আপলোড করবেন সেইখানে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সার্টিফিকেট আপলোড করার জায়গায় উক্ত সার্টিফিকেটটি সাবমিট করতে হবে। নইলে সংশ্লিষ্ট মেট্রো বা জেলার পুলিশ অফিস আপনার বর্তমান ঠিকানায় আবেদন গ্রহণ করবেন না।

অনলাইনে আবেদন বাতিল হবার কারণসমূহ

  • বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তগত ভুল।
  • পাসপোর্টে উল্লেখ্য নেই এমন মহানগর/জেলার অধীন কোন থানায় আবেদন করলে।
  • আপলোডকৃত কাগজপত্র স্পষ্টভাবে দেখা না গেলে,স্ক্যান ভালো না হলে।
  • পাসপোর্ট কপিটি প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা কর্তৃক তারিখসহ স্বাক্ষরীত না থাকলে।
  • অন্যের বা ভুয়া চালান তথ্য নিজের আবেদনে ব্যবহার করলে।
  • আরেকজনের চালান কপি নিজের আবেদনে আপলোড করলে।
  • পাসপোর্টের ঠিকানায় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সার্টিফিকেট সাবমিট না করলে।
  • আবেদনকারী বিদেশে অবস্থান করলে সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক পাসপোর্টের তথ্য পাতার কপি সত্যায়িত করা না থাকলে।
  • বাংলাদেশী নাগরিক কিন্তু বিদেশী পাসপোর্ট হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট না করলে।

[আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে নিচের সাধারণ জিজ্ঞাসা অংশটি দেখুন]

সাধারণ জিজ্ঞাসা 

১) বিদেশ থেকে কি আবেদন করা যাবে?

 বিদেশ থেকে অনলাইনে Police Clearance সার্টিফিকেইট এর আবেদন করার কোনো পদ্ধতি নেই। আপনাকে সরাসরি উক্ত দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে আপনার পাসপোর্টের তথ্য পাতার সত্যায়িত কপি অ্যাপ্লিকেশনের সাথে জমা দিতে হবে।

২) আবেদনের স্ট্যাটাস কি কি হতে পারে?

আবেদনের কাজ সঠিকভাবে শেষ করা হলে আপনার হোম পেজে আবেদনের স্ট্যাটাস সম্পর্কে অাপডেট দেওয়া হবে। Application Submitted লেখাটি আসলে বুঝবেন আপনার আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। 

Pending for Payment Verification / Pending for Payment এরকম লেখা আসলে বুঝবেন যে আবেদনটির জন্য আপনি এখনো ফি জমা করেন নি। Application Rejected / Payment Refused / Application Closed লেখাগুলো আসলে বুঝতে হবে আপনার আবেদনটি বাতিল করা হয়েছে।

৩) Payment Refused কি?

এই মেসেজ দেখালে বুঝতে হবে যে,  আবেদন এর সাথে যে চালান কপিটি আপলোড করেছেন সেটা ভুল, তাই ফি প্রদানের সঠিক চালান আপলোড করুন।

৪) Certificate Printed কেন আসে?

আপনার সার্টিফিকেইটটি থানায় প্রিন্ট করা হয়েছে তবে প্রিন্ট করার পর এটায় উক্ত থানার অফিসার ইনচার্জের স্বাক্ষর ও সীলমোহর যুক্ত করা হয়।

৫) Ready For Delivery /পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চেক

আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই শেষে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করা হয়ে গেলে সাইটে লগইনের পর কারেন্ট স্ট্যাটাসে Ready For Delivery বার্তাটি দেখতে পাবেন। এই বার্তা দেখার পর আপনাকে জেলা পুলিশ সুপার বা মেট্রো পুলিশ কমিশনার অফিসে যেতে হবে।

৬) মোট কত দিন লাগে সার্টিফিকেইট হাতে পেতে/ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কত দিনে পাওয়া যায়?

আবেদন সাবমিট করার পর ঢাকার মধ্যে সরকারি ৭ কার্য দিবস আর ঢাকার বাহিরে ১০ কার্য দিবসের মধ্যেই সার্টিফিকেইটটি সাধারণত তৈরি হয়ে যায়।

৭)  পিসিসি আবেদনে পাসপোর্ট নাম্বার নিচ্ছে না..!

মনে রাখবেন একটি পাসর্পোট নাম্বার দিয়ে শুধুমাত্র একবারই আবেদন করা যায়। আবেদনের কারেন্ট স্ট্যাটাস এ Delivered কথা লেখা থাকলে তবেই উক্ত পাসর্পোট দিয়ে আরেকটি আবেদনের কাজ করতে পারবেন।

অনেকসময় পাসর্পোটের মেয়াদের কারণেও এই সমস্যা হতে পারে তাই আবেদনের সময় আপনার পাসর্পোটের মেয়াদ অন্তত তিন মাস থাকতে হবে।

৮) Application Closed!

 এই লেখাটি আসলে বুঝতে হবে আপনার আবেদনটি স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে। তাই আপনাকে আবার নতুন করে ট্রেজারী চালান জমা দিয়ে পুনরায় আবেদন করতে হবে।

শেষকথা 

অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম এতটুকুই।  আশা করি আপনারা সহজেই এখন নিজে নিজে আবেদন করতে পারবেন। মনে রাখবেন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হলো এমন একটি সত্যায়িত সার্টিফিকেট যা প্রমান দিবে আপনি বাংলাদেশের একজন বৈধ্য নাগরিক এবং দেশে আপনার কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই এই মর্মে সাক্ষ্য দিয়ে থাকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top